Skip to main content

Indian rock-cut architecture : যেখানে ভূগোল ইতিহাসের থেকেও পুরোনো

2nd century BC থেকে 5th century AD,  প্রায় ৭০০ বছর ধরে পুরো Western Ghats পর্বতের বিভিন্ন জায়গায় পাথর খোদাই করে গুহা তৈরি হয়েছিল। সেই স্থাপত্যশিল্প গুলো এখনো রয়েছে, অনেকটাই ক্ষয়ে গেছে কিন্তু এখনো যা কারুকার্য আছে তা চোখ ধাঁধানোর পক্ষে যথেষ্ট। এই গুহা গুলোতে বৌদ্ধ ভিক্ষুরা থাকতেন, মূলত বর্ষা ঋতুর চার মাসের আশ্রয় ছিল। কারণ, বর্ষার সময়ে আসে পাশের গ্রাম গুলোতে ভিক্ষা করতে যাওয়া সম্ভব হতো না। আর Sahyadri এই অঞ্চলে বৃষ্টি খুব জোরালো হয় সাথে জোর হাওয়া তাই, কুটির গুলোর ঝড়-বৃষ্টিতে নষ্ট হয়ে যেত। স্বাভাবিক ভাবেই একটা মজবুত এবং টেকসই আশ্রয়ের দরকার হয়ে উঠেছিল।

বর্তমানের এই ডেক্কান(Deccan) মালভূমি  Western Ghats আর Eastern Ghats পর্বতমালার মাঝে অবস্থিত এবং এই জায়গাটি একটি  বিস্তৃত আগ্নেয়গিরির দেশ ছিল। সারা পৃথিবী জুড়ে ১১টা  Large Igneous Province আছে তার মধ্যে ডেক্কান অন্যতম।  মূলত Besalt  আর  Granite পাথরের অঞ্চল  হলো এই ডেক্কান।  কিমি পুরু লাভার স্তর জমে এই আজকের ডেক্কান। যদিও ডেক্কান নামটা আমার খুব পছন্দের মানে একটু হটকে , তবে এই 'ডেক্কান' শব্দ টা এসেছে Prakrit ভাষার দক্ষনা থেকে যেটা আবার Sanskrit শব্দ দক্ষিনা- থেকে  খ্রিস্টপূর্ব দ্বিতীয় শতাব্দী থেকে চালু।



আনুমানিক ১০ কোটি বছর আগে ভারত উপমহাদেশটি আগ্নেয়গিরি, পাহাড়-পর্বত সমেত আফ্রিকার Madagascar থেকে আলাদা হয়ে যায় আর তাতে আজ থেকে দুই হাজার বছর আগে বৌদ্ধ সন্ন্যাসীরা তাদের বাসস্থানের উপযুক্ত করে তোলেন। শস্য-শ্যামলা পশ্চিম ঘাট ডেক্কান কে বরাবর উর্বর করে রেখেছে। বিশ্বের ১৮টি Biodiversity Hot Spot মধ্যে ভারতে ২টি Spot আছে, এক ঘন সবুজ, জানা-অজানা বহু গাছ-পালা, পশু-পাখির চরণ ক্ষেত্র  এই  Western Ghats Mountain বা Sahyadri Range  আর দ্বিতীয়টি অবশ্যই হিমালয়ের এক অংশ। এই উর্বরতা আরব সাগরের উপকূলে অবস্থানের জন্য  'ডেক্কান রুট' ব্যাপারীদের কাছে খুব বিখ্যাত। পশ্চিমের সমস্ত ব্যাবসায়ীরা এই রাস্তা ধরেই দক্ষিণ ভারতে যাওয়া-আসা করতো। কিন্তু, রাস্তা যেমন সুজলা সফলা, তেমন বিপদ সঙ্কুল, হিংশ্র পশু তো ছিলই সাথে ছিল ডাকাত-চোরের উৎপাত।

ফলে যখন বৌদ্ধ সন্ন্যাসীরা তাদের বাসস্থানের জন্য যে পাহাড় খোদাই করা শুরু করলেন, গ্রীক, আরব, পার্সি ব্যাবসায়ীরা এই কাজে অনুদান, উৎসাহ এবং আর্থিক ভাবে সাহায্য করলেন। এক, এই ঘন পাহাড়ি জঙ্গলে তাদের  রাতের আশ্রয় কিছুদিনের বিশ্রামের  জায়গা হলো। বিদেশী ব্যাবসায়ীরা সাহায্য করছেন জানতে পেরে তৎকালীন রাজা রাও সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিলেন। প্রচুর গুহা, বৌদ্ধ বিহার, প্রার্থনা গৃহ, আশ্রম তৈরি হলো খ্রিস্টপূর্ব দ্বিতীয় শতাব্দী থেকে বর্তমান পঞ্চম শতাব্দী পর্যন্ত।

যে কোনো কাজের মাত্রা বা মান ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে। এই গুহা গুলোর ক্ষেত্রেও তাই হলো, প্রথম যে  গুহাটি তৈরি হয়েছিল সেটা ছিল বর্তমান মুম্বাইতে, কোনো কারুকার্য নেই, এটি সাধারণ সাদা-মাটা এক প্রার্থনা গৃহ আর এই গুহাটি পূর্বদিকে মুখ করেও তৈরি হয়নি। বেশিরভাগ বৌদ্ধ আশ্রমগুলো পূর্ব মুখী কারণ বৌদ্ধ সন্ন্যাসীরা সকালের সূর্যের আলোর দিকে মুখ করে ধ্যানে বসতেন আর দ্বিতীয়ত পশ্চিমি ঝঞ্ঝার থেকে গুহাগুলোকে সুরক্ষিত রাখার জন্য  আশ্রমের প্রবেশ দ্বার পুবদিকে হতো।

কালানুক্রমে বৌদ্ধ আশ্রমগুলোর প্রার্থনা গৃহ 'এক-সে বরকার এক ' তৈরি হতে থাকলো তার সাথে আর্থিক সাহায্য আনুসাঙ্গিক অনুদানের ব্যবস্থাও বেশ দৃঢ় হতে শুরু করলো। মহারাষ্টের বিখ্যাত পাহাড়ি জায়গা Lonavla র চারপাশে  অনেকগুলো গুহা আছে। Lonavla নামটা দুটো  Prakrit শব্দের সংমিশ্রণ থেকে এসেছে, Len মানে 'বিশ্রামের জায়গা' আর aveli মানে 'সারি ',  Len-avali একসাথে হয়ে  আজকের Lonavla ভৌগোলিক অবস্থান গত ভাবে লোনাভলা  Deccan Route শুরুতেই  পরে, তাই বিদেশের ব্যাপারীরা যাওয়া-আসার পথে   বৌদ্ধ আশ্রমগুলোতে বিশ্রামের জন্য  থাকতেন এবং অর্থ সাহায্যও করতেন। তার প্রমান গুহার দেয়ালের গায়ে ক্ষোদিত লিপি, আঁকা ছবি, ভাস্কর্য্য, প্রস্তরে খোদাই করা মূর্তি ইত্যাদি।

চলুন, এবারে একটা এই সব গুহা গুলোর কালনিরুপণ-বিদ্যা অনুযায়ী খোদাই করার ঘটনা কালানুক্রম বলি। প্রচুর গুহা আছে, শুধুমাত্র Aurangabad- অজান্তা তেই যত গুহা রয়েছে তার বর্ণনা দিতে কয়েক মাস লেগে যাবে। বৌদ্ধ গুহা আশ্রমগুলো দুই প্রকারের, এক: বিহারাদুইপ্রার্থনা গৃহ।  বিহারা হলো যেখানে ছাত্ররা একসাথে থাকতো পড়াশোনা-ধ্যান করতো, আর প্রার্থনা গৃহগুলি, নাম শুনেই বোঝা যাচ্ছে বোধিচিত্ত, আধ্যান চর্চা, ধ্যানচিন্তন এসব কিছুর ঘর ছিল।

বিহার রাজ্যটির নামানুসার এই বৌদ্ধ গুহা আশ্রমগুলির 'বিহারা' থেকে হয়েছে। গৌতম বুদ্ধ এবং তাঁর  পরবর্তী কালের ১৫০০ বছর ধরে  গাঙ্গেয় উপকূল জুড়ে অসংখ্য-অজস্র বৌদ্ধ আশ্রম ছিল।

এখানে কালানুক্রম তালিকাটা একেবারে প্রার্থনা গৃহগুলি তৈরি এবং তার কারুকার্যের ওপরে নির্ভর। সুতরাংশিল্পের কারুকার্যের অনুসারে মোট নয় টা গুহার নাম বলছি, এছাড়াও অসংখ্য গুহা রয়েছে। আমি গত দেড় বছর ধরে এগুলো ঘুরে-ঘারে দেখেছি আর blogging করেছিএই তালিকার দুটো গুহা আমার এখনো দেখা বাকি আছে।

বৌদ্ধ প্রার্থনা গৃহগুলির ছবি আর details জন্য  blog নিচের link গুলো click করুন:
  1. kondivite, Mumbai
  2. Bhaja, Lonavla - Bhaja Cave
  3. অজান্তা- দশ নম্বর গুহা, Aurangabad
  4. pitalkhora, Aurangabad
  5. Kondana, Karjat
  6. অজান্তা- নয়  নম্বর গুহা, Aurangabad
  7. বুদ্ধা  Leni, Nasik - Buddha Leni
  8. Bedse, Kamshet - Bedse Cave
  9. Karla , বৃহৎ উপাসনা গৃহ, Lonavla - The Great Karla Cave
প্রার্থনা ঘর গুলোর বৈশিষ্ট গুলো এক রকমের হয়, যেমন আয়তাকার ঘর, ঘরের শেষের দিকে হয় এক বিশালাকৃতি বৌদ্ধস্তূপ অথবা বোধিসত্বর পূর্ণাঙ্গ মূর্তি। অজান্তা- নয় দশ নম্বর গুহাটা ছাড়া বাকি টা গুহাতেই  স্তুপা আছে। অজান্তা- গুহা গুলো যেহেতু মহায়ান বৌদ্ধদের তাই সে দুটোতে বোধিসত্বর দাঁড়িয়ে মূর্তি রয়েছে।  অন্যান্য গুলো হীনয়ান বৌদ্ধদের তাই তাতে শুধু মাত্র একটি করে বৌদ্ধস্তূপ রয়েছে।

Karla গুহাতে যে প্রার্থনা ঘরটি আছে তার স্তম্ভ গুলো গুলোর সুক্ষ কারুকার্য সেই সময়ের সামাজিক প্রেক্ষাপট অনেকটা তুলে ধরে। সুবিশাল স্তম্ভ গুলোর পুরোটা বিভিন্ন পশু, অলংকৃত নারী-পুরুষের মূর্তি,  সুসজ্জিত রথ, ফুল-পাতার ভাস্কর্য্য শিল্প কলায় ভর্তি। স্তম্ভের এবং দেয়ালের খোদাই করা লিপি থেকে এই প্রার্থনা ঘর গুলো কারা অনুদান করেছিলেন সেই তথ্য জানা যায়।ঘরে ঢোকার দরজার ওপর ধানুকাকৃতি খিলানগুলো কোথাও কোথাও এখনো রয়েছে। সেগুলোর এক বড়ো ভূমিকা ছিল। সকাল সূর্যের কিরণ সেই খিলান মধ্যে দিয়ে সোজা বৌদ্ধস্তূপ উপরিভাগে  অথবা বোধিসত্বের মুখে পড়তো। সকালের ধ্যানান্তে বৌদ্ধ ভিক্ষুরা এই ঘরে প্রার্থনা সেরে ভিক্ষে করতে যেতেন। বিশেষ দিনে মানে বৌদ্ধ পূর্ণিমাতে এই খিলানের উল্টোদিকে সাদা কাপড় আলো ফেলে প্রার্থনা করার রীতিও ছিল।

প্রতিটা গুহায় বর্ষার জল ধরে রেখে জলাধার বানিয়েছিলেন যা এখনোও অখুঁত আছে।

Photograph:


Map route of all the Buddhist caves mentioned above

Kondivite Chaitya, Mumbai

Budha Leni Chaitya, Nasik

Arch shaped door, inside of Buddha Leni cave.

Ajanta cave number 10, Aurangabad

The great Chaitya of Karla

Bhaja Cave, Lonavla

Entrance of Ajanta cave number 9 chaitya.


Comments

Popular posts from this blog

কদম ফুল - Kadam phool- common burflower

বর্ষাকালের সিগনেচার বলা হয় কদম ফুলকে , আরেক নাম নীপ , " এসো নীপ বনে ... " কবিতা তো জানাই আছে যাতে বর্ষা মানেই নীপ ( কদম্ব ও বলে অনেক রাজ্যে ) ।   খুব পরিচিত এই ফুল , নিটোল গোলাকার , প্রথমে সবুজ , পরে লাল থেকে টকটকে কমলা রঙের সাথে অসংখ্য লম্বা সাদা ফ্রিলস পুরো ফুল জুড়ে ।   হাতে নিলে বোঝা যায় বেশ একটু ভারী , মানে কাউকে ঢিল ছুড়ে মারার মতো আর ওই সাদা ফ্রিলস গুলো এমনিতে নরম কিন্তু ছুড়লে হুঁহুঁ , লাগবে বেশ। খুব মিষ্টি একটা গন্ধ আছে , গাছের পাস দিয়ে গেলেই টের পাওয়া যায় ফুল ফুটেছে   ( কদম তলায় কে ?) । প্রচুর ফ্র্যাংগনান্স বা আতর তৈরি হয় এই গন্ধের। আমাদের দেশের লিপিগুলোতে কদম ফুলের ও গাছের নাম আছে আর আমাদের পৌরাণিক কথকথায় কদম ফুলের বড়ো মুখ্য একটা জায়গা আছে।   ভারতের উত্তর দিকে , ভগবৎ পুরান থেকে শুরু রাধা ও কৃষ্ণের দুজনের জীবনেই   কদম ফুল বেশ গুরুত্বপূর্ণ।   বৃন্দাবন - মথুরায় , গোবর্দ্ধন পাহাড়ের দিকে   প্রচুর কদম গাছ , এই সময় মানে বর্ষাকালে একবার রাধে - রাধে

রাগের ছবি

১ ) মেঘ মল্লার : মেঘ ( সংস্কৃত বুৎপত্তি ) মল্লার একটি হিন্দুস্তানি শাস্ত্রীয় মৌসুমী   রাগ।   কথায় বলে এই রাগ বৃষ্টিকে আমন্ত্রণ করে যেখানে গাওয়া হয় সেখানে। ' মেঘ মল্লার ' রাগ মেঘের অনুরূপ যার মধ্যে মল্লারের আভা রয়েছে। মল্লার পরিবারের অন্যান্ন রাগগুলি হলো : মেঘ , মিয়াঁ কি মল্লার , গৌড় মল্লার , রামদাসী মল্লার , ধুলিয়া মল্লার ইত্যাদি। ঠাট : কাফি। আমাজন প্রাইমের ' বন্দিশ ব্যান্ডিট ' ওয়েব সিরিজের লাস্ট এপিসোডে ফরিদ হাসান আর মোহাম্মদ আমান মেঘ মল্লার গেয়েছে এবং তাতে বৃষ্টি এসেছে। শঙ্কর - এহসান - লয় এই   গানের দ্বায়ীত্বে ছিলেন। একটা আর্টিকলে তাদের কথা পড়লাম যে , যোধপুরে ২০২০ - র এপ্রিল মাসে এই গানটা যেদিন পুরো গাওয়া হয়েছিল সত্যি বৃষ্টি পড়েছিল , যা কোনোদিনও হয় নি নাকি। ২ ) গৌড় মল্লার :   হিন্দুস্তানি শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের একটি রাগ যা মল্লারের বৈশিষ্ট্য বহন করে আর এই   ' গৌড় ' নামের রাগটি এখন বিলুপ্ত হয়ে গেছে , মানে সে রকম করে কেউ গায় না । মল্লার পরিবারের

Baya Weaver's Nest

Once upon a time huge number of retort-shaped Babui’s nests were hanged from the coconut trees of my home. The small sparrow type gregarious bird commonly known as Baya Weaver but in Bengali we called them as “ Babui pakhi " . These birds are famous for the elaborately woven nests   hanging from tree's twig. The colour of  both male and female  birds is grey but during their breeding season the male becomes yellow in colour with a crown.  I spent some time in my childhood to explore the type and stage of the nest, the weaving process of the nest by the birds and now I realise those moments  were really worthy .  It was really an excellent experience to exploring the phase of the nest. Even I used to collect the abandoned, broken or old nest when those were dropped off to the ground.  The awesome nests mostly can be found in villages not in the cities, specially in India. Nowadays it's rare to see them due to lot of man made changes... recently I went to Bag