Skip to main content

The Tour Guide of Fort : Episode 2

Alphabetically লিখছি,  #দুর্গ_কথা_ রাজস্থানের Amer Fort #দুর্গ_কথা_১ রাজস্থানের Amer Fort  কে নিয়ে লিখেছি, #দুর্গ_কথা_ তে মহারাষ্ট্রের দৌলতাবাদ বা দেবগিরি Fort কে লিখছি

Fort গুলোর নাম তার অবস্থিত জায়গার নামানুসারে হয় | দৌলতাবাদ বা দেবগিরি দুটো নামেই সমৃদ্ধশালী শ্রীবৃদ্ধি আছে, Geographically এখন শুধু  জায়গাটায় শ্রী আর তার ঐতিহ্য রয়ে গেছে, সমৃদ্ধি টুকু Fort গায়ে লেপটে আছে | বলতে গেলে এককালের কিছুদিনের (ভারতবর্ষের ইতিহাসে বছর তা কিছুদিন হয় ) রাজধানী আজ ন্যূনতম একটি গ্রামে পরিণত হয়েছে | ট্যুরিস্ট দের ওপরেই গ্রামবাসীদের জীবিকা নির্ভর করে এখন, বুঝতেই পারছেন এই Corona virus lockdown- চক্করে সেই এককালের 'সমৃদ্ধশালী' দৌলতাবাদ বা দেবগিরির কি শোচনীয় অবস্থা হতে পারে |
Note : আমি just situation টা বল্লাম, lockdown থাকবে না উঠবে সেই নিয়ে কিছু বলছি না |

দৌলতাবাদ, সুপ্রসিদ্ধ ঔরঙ্গাবাদ শহর থেকে ১৭ কিমি দূরে মহারাষ্ট্রের একেবারে মাঝামাঝি জায়গায়, ডেক্কানের সবুজ পাহাড়ে ঘেরা | দৌলতাবাদ বা দেবগিরি Fort পাঁচবার হাত বদল হয়েছে, অনেকগুলো যুদ্ধ, রাজঘারানার সাক্ষী |

চলুন Fort ঘোরার আগে এর ইতিহাসটা একটু জেনে নিই | দৌলতাবাদ নামটা পরে হয়েছে প্রথমে নাম ছিল দেবগিরি, স্বয়ং মহাদেব নাকি এককালে এখানে থাকতেন তাই এইজায়গার নাম ছিল দেবগিরি literally যাকে বলে "Hills of God” | এক পাহাড়ের ওপর পাশে সবুজ পাহাড়ে ঘেরা  এতো সুন্দর জায়গা কার না ভালো লাগে ! ৫২ নম্বর জাতীয় সড়ক দৌলতাবাদ থেকে  মহেশ্বর, মান্দাভ হয়ে সোজা ইন্দোর অব্দি গেছে, মানে আপনার গাড়ি আর সময় থাকলে একটা Long Drive করতেই পারেন | তো মহাদেব এই জায়গা ছেড়ে অন্যত্র চলে যাবার অনেক-অনেক বছর পরে প্রায় নবম শতাব্দীতে পশ্চিম ডেক্কান প্রদেশের যাদভ রাজবংশ তৎকালীন দেবগিরি প্রদেশে তাঁদের রাজধানী স্থাপন করেছিলেন | প্রায় পাঁচশো বছর ধরে যাদভেরা মহারাষ্ট্র, কর্ণাটকের উত্তরভাগ মধ্যপ্রদেশে রাজত্ব করেন দিল্লীর মুসলিম সুলতান দ্বারা আক্রমণের আগে পর্যন্ত | এই যাদভ রাজবংশ আবার বৈদিক উপজাতি যদু বংশের উৎপত্তি যেটা নাকি কৃষ্ণেরও বংশ ছিল | অনেক Scholar দের মতে বর্তমান মারাঠা সম্প্রদায় এই রাজবংশেরই এক ধারা কারণ হিসেবে মারাঠি ভাষাটি ওই সময়ের যাদভদের খোচিত শিলালিপিতে পাওয়া গেছে |

দ্বাদশ শতাব্দীর শেষের দিকে তৎকালীন যাদভ বংশীয় রাজা পঞ্চম ভিল্লামা এই ত্রিকোণাকার, অনন্ত পরাক্রম, দুর্ভেদ্য দেবগিরি Fort টি বানিছিলেন | এই Fort টির বেশ কিছু বিশেষতঃ আছে, যেগুলো একটু পরেই বলছি | পঞ্চম ভিল্লামাকে যাদভ বংশের শ্রেষ্ঠ রাজাদের মধ্যে একজন মানা হয় | তার রাজত্বকালে তিনি  হয়সালাস, পারামাওরা আর চালুক্য দের পরাজিত করে কোঙ্কন উপকূলের পুরোটাই তার রাজ্যসীমার অন্তর্গত ছিল |

চোদ্দশো শতাব্দীতে দিল্লি Sultanate- আল্লাউদিন খিলজি দেবগিরি আক্রমণ করে কিন্তু ওই বিশেষ সংরক্ষিত গঠনের জন্য Fort দখল করতে পারে নি তবে দেবগিরির বেশ কিছু অংশ তার রাজ্যের অন্তর্গত করে যার ফলে তৎকালীন যাদভ বংশীয় রাজা রামচন্দ্রকে এক মোটা খাঁজনা খিলজিকে পাঠাতে হতো | স্বাভাবিক ভাবে আর্থিক টানাটানির জন্য কিছুদিন পরে রামচন্দ্র সেই খাঁজনা পাঠানো বন্ধ করেন, অগত্যা দ্বিতীয়বার খিলজি দ্বারা দেবগিরি Fort আক্রমণ এবং কেল্লার হাতবদল তার সাথে তৎকালীন রাজা রামচন্দ্র তাঁর ছেলে শঙ্করদেবকে হত্যা করে হার্পালদেব খিলজির সাথে হাতমিলিয়ে সিংহাসনে বসলো | তখনকার দিনে মুসলিম শাসকেরা ভারতে পাকাপাকি কব্জা করার জন্য আফ্রিকা থেকে শক্তিশালী ক্রীতদাস নিয়ে আসতো | এরকম দুই জন আফ্রিকান Freelance ক্রীতদাস মিলিটারি নেতার নাম এই Fort- ইতিহাসে আছে | একজন মালিক কাফুর আর একজন মালিক আম্বর | খিলজি দ্বিতীয়বার এই মালিক কাফুরের সাহায্যেই দুর্গ দখল করে | মালিক কাফুর না থাকলে খিলজির পক্ষে সম্ভব ছিল না |

Chand Minar

খিলজি Dynasty- পর দিল্লি Sultanate- আরেক Dynasty, তুঘলক দেবগিরি Fort দখল করে এবং ১৩২৮ সালে মোহাম্মদ বিন তুঘলক তার রাজধানী দিল্লি থেকে দেবগিরিতে স্থানান্তরিত করে আর দেবগিরির নাম পরিবর্তন করে দৌলতাবাদ হয়ে যায় | সমৃদ্ধশালী এই রাজ্যে দৌলতের কোনো অভাব ছিল না বলে নতুন নাম হলো দৌলতাবাদ (Abode of Wealth) | নামটা যথার্থই বটেরাজধানীর স্থান পরিবর্তনের সাথে-সাথে প্রচুর প্রজাদেরও জোর করে দেবগিরিতে নিয়ে আসে  | তবে বছর পরে তুঘলক আবারদিল্লি চলোবলে চেঁচালো আর রাজধানীও স্থান পরিবর্তন করলো দৌলতাবাদ থেকে | কিন্তু  প্রচুর খরচ সাপেক্ষ এই Project failure- জন্য মোহাম্মদ বিন তুঘলক 'পাগলা রাজা' নামে খ্যাত যেটা আমরা সবাই জানি | এই পদ্ধতিতে যারা দিল্লি থেকে দৌলতাবাদ এসেছিলেন তাদের অধিকাংশ এখানেই থেকে গেলেন |

বহুবারের চেষ্টায় পনেরোশো শতাব্দীর একেবারে শেষ বছরে মালিক আম্বর নামে আর একজন Ethiopian freelance মিলিটারি নেতার সাহায্যে দৌলতাবাদ Fort আরেক বার হাতবদল হয়ে Ahmadnagar Sultanate- অন্তর্গত হলো এবং দৌলতাবাদ তৃতীয়বার রাজধানী হলো | তৎকালীন সুলতান ছিল নিজাম শাহীএই সময় মালিক আম্বর, যার আসল নাম সিদ্দি, শিশুকালে যার বাবা-মা তাকে দাস বাজারে বেঁচে দেয় এবং ঘটনা চক্রে সে ভারতে এসে পৌঁছোয়, তিনি  'খড়কি' নাম দৌলতাবাদের কাছে এক অত্যাধুনিক নতুন শহর পত্তন করেন যাতে খুব সময়ে কম খরচে canal water supply system চালু করেন, স্থানীয় ভাষায় যাকে Nahr বলতো | ঔরঙ্গজেব তার জামানায় এই খড়কির শহরের নাম বদলে তার নিজের নামানুসারে ঔরঙ্গাবাদ করে দেয় এবং তার পর থেকে মানে সতেরোশো শতাব্দী সময় ধীরে ধীরে দেবগিরি তথা দৌলতাবাদ তার জৌলুশ হারাতে থাকে আর বর্তমানে সেই হাজার বছরের পুরোনো ঐতিহ্যময়ী, পুরাকালীন হিন্দু যাদভ রাজবংশের রাজধানী শহর একখানি ছোটো গ্রামে পরিণত হয়েছে, আগে এর কথা বলেছি |

মাঝে সামান্য কয়েক বছরের জন্য মারাঠাদের দখলেও এই Fort আসে | এরপর ১৬৩২ সালে অসংখ্য সৈন্য সামন্ত নিয়ে শেষবারের মতো শাহ জাহান দ্বারা আবার Fort- মালিকানা হাত বদল হলো | দুর্ভেদ্য Fort, যেহেতু সহজে একে নিয়ন্ত্রণে আনা যায় না, তাই মুঘলরা প্রথমেই প্রচুর লোকজন নিয়ে আক্রমণ করেছিল |

ইতিহাস শেষ এবার Fort- গল্প শুরু | দেবগিরি Fort- বৈশিষ্ঠে রাজা পঞ্চম ভিল্লামার বুদ্ধিমত্তার পরিচয় পাওয়া যায় | অবস্থানগত গঠনগত দিক থেকে Fort টি এতটাই দুর্ভেদ্য ছিল যে সোজা পথে আক্রমণ বা যুদ্ধ করে তার দখল নেওয়া সম্ভব ছিল না, ফোর্ট দখলের একমাত্র উপায় ছিল গুপ্ত চক্রান্ত ষড়্যন্ত্র, মানে এককথায় রণনীতিতে নয় গুপ্ত কৌশলে দেবগিরি Fort কে দখল করতে হতো | Fort টি প্রায় 200 মিটার উঁচুতে একটি ত্রিভুজাকৃতি পাহাড়ের উপর  দাঁড়িয়ে আছে | পাহাড়ের নিচের দিকের বেশিরভাগ ঢালু অংশটি মানে ত্রিভুজের Base টা ত্রিভুজের আকৃতির তুলনায় চওড়া নয়, বেশ সরু | শক্ত প্রতিরক্ষার খাতিরে যাদব বংশের রাজারা পাহাড়ের প্রায় 50-মিটার উল্লম্ব দিক ছেড়ে দিয়েছিলেন, মানে Fort টাকে অদ্ভুত ত্রিভুজাকৃতি পাহাড়ের ঠিক মাঝামাঝি তৈরি করেছিলেন | এই Fort কে দুর্ভেদ্য কেন বলছি তার কিছু কারণ দিলাম

১)  Fort ঢোকার মুখ থেকে শেষ অব্দি পুরো উর্ধমুখী ঢালু রাস্তা যাতে শীর্ষে পৌঁছতেই 'হালত' খারাপ হয়ে যায় |
২)  Fort- পৌঁছানোর একমাত্র উপায় হল একটি সরু সেতু, যেখানে দু'জনের বেশি আটবে না তারপর পাথরে খোচিত একটি দীর্ঘ গ্যালারী রয়েছে যেটাও পুরো উর্ধমুখী ঢালু |
৩)  এই দীর্ঘ গ্যালারীর মাঝামাঝি বরাবর খাঁড়া সিঁড়ি রয়েছে যার ওপরটা ঢাকা, একসময়ে সেখানে আগুন জ্বালাবার ব্যবস্থা ছিল, কোনো ভাবে যদি শত্রু চলেও আসতো এই অব্দি দুর্গের ভেতর থেকে এখানে আগুন জ্বালিয়ে দিত ফলে আক্রমণকারীরা বের হতে পারতো না |
)  দুর্গে ঢোকার বের হবার একটাই রাস্তা ছিল ফলে একবার কেউ ঢুকে গেলে তাকে বেরোতে হলে পুরো দুর্গ টাকে ঘুরতে হতো |
৫)  গ্যালারীর মাঝে মাঝে কামান রাখা ছিল, এখনো সে সব আছে | সেটা অবশ্য মুঘল জামানায় |
)  মোট টি পাঁচিল দিয়ে পুরো দুর্গ ঘেরা, মানে Layers of  wall | প্রতিটা পাঁচিলে একটা করে দরজা আর সেগুলো কখনোই এক দিকে নয় |
)  দুর্গের পাচিলের দরজার গায়ে প্রচুর ধাতু বা পাথরের তৈরি কাঁটা আছে সেগুলো হাতিকে আটকানোর জন্য ঐসময়ে বারুদ ছিল না, মত্ত হাতির গায়ের জোরে দুর্গের দরজা ভাঙা হতো তাই ওই ব্যবস্থা |
)  দুর্গের পুরো পাহাড়টি মসৃণ খাঁজ বিহীন মানে পাহাড় বেয়ে উঠে রাতের অন্ধকারে, কুমিরের খাল ডিঙিয়ে দুর্গ দখল জাস্টনামুমকিন’ |
৯)  প্রথম পাঁচিলে Entrance টা ছিল ডানদিকে আর রাজ্যের Symbolic flag দুর্গের বাঁদিকে রাখা থাকতো, যেটা একেবারে উল্টো | তাই যারা আক্রমণ করতে আসতো বুঝতো না দরজাটা কোথায় |

View of Daulatabad city


 দুর্গ তিনটে পাথরের পাঁচিলে ঘেরা  |  প্রথম পাঁচিল দিয়ে শুরু করছি | দুর্গের দেখভাল এখন Archelogical Survey of India (ASI ) করে, অটো থেকে নেমে কাউন্টার থেকে টিকিট কেটে ( অন্যান্য সব Site-র মতো  এখানেও ২৫ টাকার টিকিট) যখন দুর্গের প্রথম পাঁচিলের Security Checking Gate কাছে পৌঁছবেন দেখবেন কিছু দূরে আরো দুটো বা তিনটে দরজা যেগুলো একদম পাথরের দরজার মতো দেখতে   দুর্গের পরিধির মধ্যে ঢুকলেন, ঢুকে ডান দিকে সিঁড়ি দিয়ে উঠে একটা চাতাল দেখতে পাবেন তাতে এক বিশাল-ললল বড়ো কামান (এতো, বড়ো যে Panoromic ছাড়া কোনো ফোটো তোলা যায় না ) রাখা আছেপ্রথম পাঁচিল পেরোনোর পর বাঁদিকে একখানা গভীর, মাঝারি মাপের Stepwell দেখতে পাবেন | বুঝতেই পারছেন এটা দুর্গের পানীয় জলের উৎস ছিল, Stepwell টা কিন্তু মোটামুটি ভালো অবস্থায় আছে দেখে মনে হয় এর বয়স দুর্গের চেয়ে কম আর কোনো শাসকেরাই জলের উৎসকে নষ্ট করে না | তাই এটি  বেঁচে আছে |
এবার পরের পাঁচিলে যাবার জন্য একটা ছোট Passage পেরোতে হবে যেটাতে পাশাপাশি জনের বেশি লোক একসাথে  থাকতে পারবে না | এই ছোট Passage টা একটা দুর্গপরিখা পার করার জন্য | সমস্ত দুর্গটা ওই জলভর্তি পরিখা দিয়ে ঘেরা আর তাতে কুমীর থাকতো (এখন যদিও নেই) মানে একটু আধটু তাড়াহুড়ো যদি করেছেন তো আপনি  কুমীরের ভোগে গেলেন | কোনোভাবে দ্বিতীয় পাঁচিলের কাছে গিয়ে পৌঁছলেন, এবার দরজা খুঁজে বেড়ান | কারণ প্রথম পাঁচিলের মতো এখানেও অনেক দরজা কাটা রয়েছে, তার মধ্যে একটা মাত্র আসল | আসলে তিনটে পাঁচিলেই অনেক গুলো করে দরজা বানানো সেখানে মাত্র একটা করে দরজা খুলবে, বাকি গুলো False Door, প্রাচীন মিশরে এমন System ছিল, শত্রুকে গোলকধাঁধায় ফেলার জন্য | এই Fort -এও তাই, আপনার দরজা Try করতে করতে ঘন্টা পেরিয়ে যাবে | প্রথম পাঁচিলের আসল দরজা যদি পূর্ব দিকে হয় তো দ্বিতীয় পাঁচিলের দরজা আসল দরজাটা হলো উত্তর বা দক্ষিণ দিকে | ব্যাস খুঁজে বেড়ান দরজা, পাথরে দরজা খুলতে বেশ গায়ের জোর লাগবে ওদিকে আবার Passage তা সরু বলে বেশি লোকও একসাথে দরজায় ধাক্কা দিতে পারবে না  | বেশি লোক মিলে ঠেলাঠেলি করবেনতো নিচে কুমীর, Dinner (আক্রমরকারীরা রাতেই আসে ) করার জন্য রেডি | এখন অবশ্য এই Adventure করতে পারবেন না, গাইড যদি নেন তো তার পেছন পেছন দরজা পেয়ে যাবে আর তা নাহলে তিনটে পাঁচিলের দরজা গুলো খোলাই থাকে ট্যুরিস্টদের জন্য | কিন্তু একবার ভাবুন কি সাঙ্ঘাতিক বুদ্ধিই না Apply করেছিলেন রাজা পঞ্চম ভিল্লামা এই আর্কিটেকচার , আর আমি ভাবি বিস্বাসঘাতকেরা কি চক্রান্তই না করেছিলো এহেন দুর্গ কে দখল করতে সাহায্য করে |

Courtyard of the 2nd wall

দেবগিরি ফোর্টকে ডেক্কানের সবচেয়ে শক্তিশালী দুর্গ বলা হতো | এক-এক সম্প্রদায়ের রাজার রাজত্বকালে দুর্গে নানাবিধ জিনিসের আমদানি ঘটেছে, নানা নাম, বিভিন্ন ধরণের কামান যা মুঘলদের দ্বারাই এসেছিলো | কুমীর ওয়ালা পরীক্ষা তো ছিলই, তার সাথে বাওলি  (Stepwell), হামাম, কাচারি, হাতি হুন্ড, চাঁদ মিনার, চিনি মহল, রং মহল, আন্ধেরি (অন্ধকার  Passage), শাস্তি দেবার জন্য, বারাদারি | বাহমানি সুলতান আউল উদ্দিনের দিল্লির কুতুব মিনার এতটাই ভালো লেগেছিলো যে চাঁদ মিনার মানে তার একটি Replica বানিয়ে ফেললো, যেটা ফোর্টে ঢুকে চোখে পরবে | মিনারের Base টা চকচকে পার্সি কারুকার্যের  টাইলস দিয়ে বাঁধানো, এখনো আছে সেই সব সুক্ষ কাজ কামান গুলো, চিনি মহল, রং মহল, আন্ধেরি, বারাদারি, আম খাস এই সব মুঘলদের তৈরি | চিনি মহল নাম তা শুনে মিষ্টি জাতীয় বা মিষ্টির ঘর মনে হতে পারে কিন্তু এটা আসলে VIP জেলখানা | অরঙ্গজেব এটা তার বিশেষ শত্রুদের জন্য বানিয়েছিলেন, আহমেদনগরের সুলতান, হায়দরাবাদের কুতুব শাহী সুলতান আর শিবাজী মহারাজের ছেলে সম্ভাজি এই জেলে ছিলেন | বারাদারি বানিয়েছিলো শাহ জাহাঁ তার বৌ দের থাকার জন্য |

দুর্গটি পাহাড়ের ওপরে ৬২ হেক্টর জায়গা জুড়ে আছে | দুর্গে তীর্থঙ্কর  মহাবীর জৈনের পাথরে কাঁটা পূর্ণাঙ্গ মূর্তি আছে আর অনেক ছোট মহাবীরের Relief আছে যেগুলো দুর্গের সৃষ্টিকর্তা যাদভ বংশের রাজাদের তৈরি |

দৌলতাবাদ দুর্গে নানা মাপের প্রচুর কামান দেখতে পাবেন, এগুলো সব মুঘল জামানার কারণ কামান ভারতে প্রথম এনেছিল বাবর | ইউরোপ, আরব চিনে প্রথম কামানের ব্যবহার শুরু হয় | ভারতের বেশিরভাগ কামানই ব্রোঞ্চের, থেকে . কিমি এদের রেঞ্জ হতো | আরবি পড়তে জানলে কামানের ওপরের Inscription গুলো পরে নেবেন, অনেক কিছু লেখা আছে

The courtyard after second wall where the large amount of cannons are kept

Photo 1: The fonts on the large cannon

Photo 2: The fonts on the large cannon

যাইহোক, একে  পুরোনো তারওপর বহুবারের যুদ্ধে দুর্গের অবস্থা খুব শোচনীয় | নিচের কামান ঘর গুলো আর এক্কেবারে ওপরের দিকের ঘর ছাড়া তেমন কিছু আস্ত নেই | তিনটি পাঁচিল পেরিয়ে হাঁফাতে হাঁফাতে ভেতরে পৌঁছলেন তো ! এইবার শুরু হলো দুর্গ | তবে আপনার কপাল ভালো আর বেচারি দুর্গের কপাল তো আগেই গেছে, কোমরও ভেঙেছে, ফলে বেশি মহল, courtyard নেই ওই মাত্র অত্যাধিক খাঁড়া ৭৫০টা সিঁড়ি ভাঙতে হবে দুর্গের চূড়ায় যাবার জন্য | সুতরাং একটু বিশ্রাম নিয়ে নিন, অনেক বসার জায়গা আছে | চলুন এবারে সিঁড়ি ভাঙা যাক | ওঃ  সিঁড়ির পাশেই এক ভুলভুলাইয়া আছে সেটাতে ঢুকলে একশো তা সিঁড়ি আপনি কম ভাঙতে পারেন, তবে তার জন্য হয় গাইড লাগবে নয়তো কোনো Security সাথে কিছুক্ষণ গপ্পো করে তার সাথে  ভুলভুলাইয়াতে যেতে পারেন মানে আমি যেটা করেছিলাম সেটা বললাম আরকি ! একা বা নিজেরা তাতে যাবার দুঃসাহস করবেন না দয়া করে, কেল্লা দেখা কেলো হবেসেই  সিঁড়ি দিয়ে আস্তে আস্তে ওপরে চলুন, এককালের ব্যবহৃত কিছু মহল এখনো অক্ষত রয়েছে, কিন্তু সেগুলোর খুব করুন অবস্থা | তবে একেবারে ওপর থেকে দৌলতাবাদের একটা Panoromic View পাবেন | আমি March-এ গিয়েছিলাম তখন অতটা সবুজ ছিল না | খুব ভালো বর্ষার জাস্ট পরে গেলেই, তাহলে ওই Several shades of green দেখে বুঝতে পারবেন কি অপার্থিক সৌন্দর্য এই ডেক্কানের, এই  দুর্গেরতাই বোধহয় মহাদেব কোনো এক কালে এখানে ছিলেন ! চারিদিকে সবুজ আর সবুজ, মাঝ খানে পাহাড় তাকে কেটেকুটে এক দুর্গ বানিয়েছিলো কিছু মানুষ, তাকে লুটে ভগ্নাংশে পরিণত করেছে কিছু মানুষ, কিন্তু এখনো পর্যন্ত এই প্রাচীন ডেক্কান পর্বতমালাকে লুটতে পারে নি, সে তার সবুজের সমাহার নিয়ে এখনো আমাদের Welcome করে !

..ahhh the resting pose of the current residents of fort

Comments

Popular posts from this blog

কদম ফুল - Kadam phool- common burflower

বর্ষাকালের সিগনেচার বলা হয় কদম ফুলকে , আরেক নাম নীপ , " এসো নীপ বনে ... " কবিতা তো জানাই আছে যাতে বর্ষা মানেই নীপ ( কদম্ব ও বলে অনেক রাজ্যে ) ।   খুব পরিচিত এই ফুল , নিটোল গোলাকার , প্রথমে সবুজ , পরে লাল থেকে টকটকে কমলা রঙের সাথে অসংখ্য লম্বা সাদা ফ্রিলস পুরো ফুল জুড়ে ।   হাতে নিলে বোঝা যায় বেশ একটু ভারী , মানে কাউকে ঢিল ছুড়ে মারার মতো আর ওই সাদা ফ্রিলস গুলো এমনিতে নরম কিন্তু ছুড়লে হুঁহুঁ , লাগবে বেশ। খুব মিষ্টি একটা গন্ধ আছে , গাছের পাস দিয়ে গেলেই টের পাওয়া যায় ফুল ফুটেছে   ( কদম তলায় কে ?) । প্রচুর ফ্র্যাংগনান্স বা আতর তৈরি হয় এই গন্ধের। আমাদের দেশের লিপিগুলোতে কদম ফুলের ও গাছের নাম আছে আর আমাদের পৌরাণিক কথকথায় কদম ফুলের বড়ো মুখ্য একটা জায়গা আছে।   ভারতের উত্তর দিকে , ভগবৎ পুরান থেকে শুরু রাধা ও কৃষ্ণের দুজনের জীবনেই   কদম ফুল বেশ গুরুত্বপূর্ণ।   বৃন্দাবন - মথুরায় , গোবর্দ্ধন পাহাড়ের দিকে   প্রচুর কদম গাছ , এই সময় মানে বর্ষাকালে একবার রাধে - রাধে

রাগের ছবি

১ ) মেঘ মল্লার : মেঘ ( সংস্কৃত বুৎপত্তি ) মল্লার একটি হিন্দুস্তানি শাস্ত্রীয় মৌসুমী   রাগ।   কথায় বলে এই রাগ বৃষ্টিকে আমন্ত্রণ করে যেখানে গাওয়া হয় সেখানে। ' মেঘ মল্লার ' রাগ মেঘের অনুরূপ যার মধ্যে মল্লারের আভা রয়েছে। মল্লার পরিবারের অন্যান্ন রাগগুলি হলো : মেঘ , মিয়াঁ কি মল্লার , গৌড় মল্লার , রামদাসী মল্লার , ধুলিয়া মল্লার ইত্যাদি। ঠাট : কাফি। আমাজন প্রাইমের ' বন্দিশ ব্যান্ডিট ' ওয়েব সিরিজের লাস্ট এপিসোডে ফরিদ হাসান আর মোহাম্মদ আমান মেঘ মল্লার গেয়েছে এবং তাতে বৃষ্টি এসেছে। শঙ্কর - এহসান - লয় এই   গানের দ্বায়ীত্বে ছিলেন। একটা আর্টিকলে তাদের কথা পড়লাম যে , যোধপুরে ২০২০ - র এপ্রিল মাসে এই গানটা যেদিন পুরো গাওয়া হয়েছিল সত্যি বৃষ্টি পড়েছিল , যা কোনোদিনও হয় নি নাকি। ২ ) গৌড় মল্লার :   হিন্দুস্তানি শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের একটি রাগ যা মল্লারের বৈশিষ্ট্য বহন করে আর এই   ' গৌড় ' নামের রাগটি এখন বিলুপ্ত হয়ে গেছে , মানে সে রকম করে কেউ গায় না । মল্লার পরিবারের

My days in the Gunj

এখানে সকাল হয় না, সকাল আসে... কার লেখা, কোন উপন্যাস, অনেকেই জানেন।  গল্পটা এরকম... ডিসেম্বরে হুট্ করে বাইক নিয়ে কোথাও যাওয়া যায় ঠিকই, কিন্তু থাকার জায়গা পেতে চাপ হয়। যেমন এবার হোলো ! ম্যাপ খুঁজে খুঁজে হোমস্টে দেখছি আর ফোন করে যাচ্ছি, ' নাহঃ, ওই সময় ফাঁকা নেই', বেশ কয়েক জায়গা থেকে এক উত্তর পেয়ে ভাবছি কি করবো ! তখনই আমায়রা হোমস্টে-র ওনার রাজ কিশোর গুপ্তা রিং ব্যাক করে 'ম্যাক গার্ডেন-র' হোমস্টে-র কেয়ার টেকার মনজয় দার ফোন নম্বর দিলেন। কল করে জানালাম, পরের দিন যাচ্ছি, একটা ঘরই আমার লাগবে। দু-তিন থাকবো বলাতে বললো, দুদিনই হবে তিন নম্বর দিন অলরেডি বুকড। সাত একর জমির এক কোণে এক কোলোনিয়াল বিল্ডিং, মানে টালির ছাদের কুঁড়েঘর। আম বাগানে ঘেরা, বিরাট এক লন সামনে। গেটের ডানদিকে আলু, সর্ষের খেত। টিয়া, ধূসর রঙের ধনেশ চোখের সামনে নেচে বেড়াচ্ছে। বাড়ির ভেতরে তিনটে পার্টিশন, প্রথম দরজা দিয়ে ঢুকেই বসার জায়গা আর দুই প্রান্তে দুটো ঘর। ওই জায়গা পেরিয়ে পেড়িয়ে আবার আর একটা দরজা ও দুই প্রান্তে ডান দিকে-বাঁদিকে দুটো ঘর। মাঝের বসার জায়গায় একটা ফায়ারপ্লেস। শীতকালে গেলে দিব্বি জ্বালিয়ে রাত কাটানো য